পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গোপনে রাখা আছে শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় ?



কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরে শোকে উন্মাদ গান্ধারী অভিশাপ দেন কৃষ্ণকে । ধৃতরাষ্ট্র-পত্নী ক্রোধার্ত স্বরে বলেন‚ কুরু বংশের মতোই ধ্বংস হবে কৃষ্ণের যদু বংশ । কৃষ্ণ মাথা পেতে নেন সেই অভিশাপ ।
বিফলে যায়নি গান্ধারীর অভিশাপ । কয়েক দশকের মধ্যে নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিলুপ্ত হয় যদু বংশ । যাদবদের বিনাশের পরে একদিন শোকগ্রস্ত শ্রীকৃষ্ণ বনে বিশ্রাম বিচ্ছিলেন ।
সে সময় তাঁর রাঙা চরণ চোখে পড়ে এক ব্যাধের । সে ভাবে ওটি কোনও পাখি বোধ হয় । তির নিক্ষেপ করে ব্যাধ | কিন্তু কিছু সময় পরে ভুল বুঝতে পেরে ব্যাধ দেখেন তিনি আঘাত করেছেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণকে ।
ক্ষমা চেয়ে লুটিয়ে পড়ে ব্যাধ । কিন্তু তাঁকে আশ্বস্ত করেন শ্রীকৃষ্ণ । বলেন‚ এটাও ভবিতব্য । গত জন্মে ব্যাধ ছিলেন বালি । এবং তিনি নিজে রামচন্দ্র । এই জন্মে সেই কৃতকর্মের ফল সাধিত হল ।
শ্রীকৃষ্ণের প্রয়াণের পরে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন পাণ্ডবরা । কৃষ্ণের চিতাভস্ম নদীতে ভাসিয়ে দেন তাঁর প্রিয় অর্জুন । বলা হয়‚ তখনও অক্ষত ছিল কৃষ্ণের হৃদয় । সেটিও জলে ভেসে যায় ।
এর পরে কাহিনিতে প্রবেশ রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের । প্রাচীন কলিঙ্গের এই রাজা ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত । তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন বিষ্ণু । বলেন‚ নীলমাধব রূপে তিনি ধরা দেবেন রাজার কাছে | সেই আদেশ পূর্ণ করতে নীলমাধবের মন্দির নির্মাণ করান রাজা । সেটাই আজকের পুরীর জগন্নাথ মন্দির ।
একদিন নদীতে স্নান করছিলেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন । হঠাৎ দেখেন জলে ভেসে আসছে একটি লাল লোহার খণ্ড। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেটি নরম । কী মনে হতে‚ সেটি স্পর্শ করেন রাজা ।
সেই সময় তিনি বিষ্ণুর কণ্ঠস্বর শোনেন । ভগবান বলেন‚ ওটি আসলে তাঁর হৃদয় । বরাবর থাকবে মর্ত্যলোকে ।
এই বাণী শোনার পরে রাজা ওই লৌহদণ্ড প্রতিষ্ঠা করেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে । আজও নাকি গোপনে রাখা আছে সেটি । কিন্তু কারও দেখা বা স্পর্শ করা নিষেধ ।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গোপনে রাখা আছে শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় ? পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গোপনে রাখা আছে শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় ? Reviewed by Admin Amit on May 02, 2017 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.