অম্বুবাচী উপলক্ষ্যে কামাখ্যা মন্দিরে চলছে মা কামাখ্যা যোনি পূজা…

image
মা কামাখ্যারপ্রণামঃ
=================
ত্বং আদ্যাদেবী কামাখ্যারুপেন জগত্মাতৃকা তত্ চরনারবিন্দ সর্বভূতানাং স্বর্মপয়ামি ॥১
কামাখ্যে বরদে দেবী নীলপর্ব্বতবাসিনী ত্বং দেবী জগতাং মাতর্যোনিমুদ্রে নমোহস্তুতে।।
==========================
জয় মা কামাখ্যা >>>>
৫১ শক্তিপীঠের সব কটি পীঠেই মা জগদম্বা ভৈরব সহিত রয়েছেন । সন্তান দের জন্য বিলিয়ে
দিয়েছেন মাতৃস্নেহ । ব্রহ্মময়ী আদিশক্তির সাথে আমাদের সম্পর্ক সন্তান আর মায়ের সম্পর্ক । আমাদের মা। সামান্য কীট পতঙ্গ থেকে শুরু করে দেবতাদের মা। ৫১ পীঠের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্য পীঠ- এবং সাধনার স্থান পীঠ হল কামাখ্যা পীঠ । ভারতবর্ষের আসাম রাজ্যের রাজধানী গৌহাটির কাছেই নীল পর্বতে এই পীঠ অবস্থিত । কালিকাপুরান, দেবী ভাগবত পুরান, তন্ত্র শাস্ত্র গুলিতে এই পীঠের অসীম মাহাত্ম্যের কথা বর্ণিত হয়েছে । ভগবান বিষ্ণুর চক্রে খন্ডিত হয়ে মহাদেবী মা সতী দেবীর যোনি দেশ এই স্থানে পতিত হয়েছিল । দেবীর নাম কামাখ্যা, আর ভৈরবের নাম উমানন্দ । বৃহদ্ধর্ম পুরান বলেতীর্থচূড়ামণিস্তত্র যত্র যোনিঃ পপাত হ ।তীরে ব্রহ্মনদাখাস্য মহাযোগস্থলং হি তৎ ।।অর্থাৎ- যে স্থানে দেবীর যোনি পতিত হয়েছিল, সেই স্থান তীর্থ চূড়ামণি । স্থানটি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে
। মহাযোগস্থল বলে জগতের জন্য হিতকর । তস্মিংস্তু কুব্জিকাপীঠে সত্যাস্তদ্ যোনিমণ্ডলম্ ।পতিতং তত্র সা দেবী মহামায়া ব্যলীয়ত ।। লীনায়াৎ যোগনিদ্রায়াং ময়ি পর্বতরূপিণী ।স নীলবর্ণঃ শৈলহভুৎ পতিতে যোনিমণ্ডলে ।। কালিকা পুরান/ দ্বিষষ্টিতম্ অধ্যায় যে স্থলে দেবীর যোনিমণ্ডল পতিত হয় , তাহার নাম কুব্জিকা পীঠ এবং মহামায়া দেবীও সেই পীঠেই বিলীন হইয়া থাকেন। এই পর্বতে দেবীর যোনিমণ্ডল পতিত হওয়ায় ইহা নীলবর্ণ হইয়াছিল । এই জন্য এই পর্বত নীলাচল নামে বিখ্যাত ।সত্যাস্ত পতিতং তত্র বিশীর্ণং যোনিমণ্ডলম্ ।শিলাত্বমগমচ্ছৈ
লে কামাখ্যা তত্র সংস্থিতা ।।সংস্পৃশ্য তাং শিলং মর্ত্যো হ্যময়মরাপ্লুয়াৎ । অনর্ত্যো ব্রহ্মসদনং তৎস্থো মোক্ষমবাপ্লুয়াৎ ।।কালিকা পুরান / দ্বিষষ্টিতম্ অধ্যায়অর্থাৎ – সতীর বিশীর্ণ যোনিমণ্ডল নীলাচলে পতিত হয়ে প্রস্তরত্ব প্রাপ্ত
হয়েছে। সে প্রস্তর ময় যোনিতে কামাখ্যা দেবী অবস্থান করেন। সে মনুষ্য ঐ শিলাকে
স্পর্শ করে , সে অমরত্ব ( এখানে অমর বলতে দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবনের উপমা দেওয়া হয়েছে) পায় ও অমর হইয়া ব্রহ্ম সদনে অবস্থান করতঃ পরিণামে মোক্ষ লাভ করে । তত্রত্যা দেবতাঃ সর্বাঃ পর্বতাত্মকতাঃ ।পর্বতেষু বসন্ত্যেব দেবতা অপি ।।তত্রত্যা পৃথিবী সর্বা দেবীরূপা স্মৃতা বুধৈঃ ।নাতঃ পরতরং স্থানং কামাখ্যাযোনিমণ্ডলাৎ ।।দেবী ভাগবত/ ৭ ম
স্কন্ধ/ অষ্টত্রিংশ অধ্যায়
image
অর্থাৎ- নীলাচলে
দেবতা সকলে পর্বত রূপে অবস্থিত আছেন
এবং অপরাপর প্রধান প্রধান দেবতা সেই সেই
পর্বতে অধিষ্ঠান করিতেছেন । অধিক কি বলিব
সেই স্থানে অখিল ভূ ভাগকেই বুধ গণ দেবী
স্বরূপ বলিয়াছেন । বস্তুত উক্তঃ
কামাখ্যাযোনিমণ্ডল অপেক্ষা প্রশস্ত স্থান আর
দ্বিতীয় নেই ।এই হল কামাখ্যা পীঠের বিবরণ ।
অসম রাজ্য তথা কামাখ্যা মানুষের কাছে আজও
কৌতূহলের বিষয় । লোক প্রবাদ অনুযায়ী
এখানকার আদি বাসিন্দা গন নানারকম যাদু বিদ্যায়
পারদর্শী । এখানে তালা পাতায় লিখিত বা মন্দিরে
খোদিত বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্র এখনও দেখা যায়। তাই
অসম ও কামাখ্যা মন্দির নিয়ে মানুষের কৌতূহলের
শেষ নেই ।
image
অম্বুবাচী মেলা হিন্দু ধর্মের বাৎসরিক
উৎসব । লোকবিশ্বাস মতে আষাঢ় মাসে
মৃগ শিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে
পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়। এই
সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়।
অম্বুবাচীর নিয়ম [সম্পাদনা ]
অম্বুবাচীর দিন থেকে পরর্বতী তিন দিন
পর্যন্ত কামাখ্য দেবীর দুয়ার বন্ধ থাকে
[১] ও এই সময়ে কোনো ধরনের মাংগলিক
কার্য করা যায়না। চতুর্থ দিন থেকে
মঙ্গলিক কাজে কোনো বাধা থাকেনা।
অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, গৃহ প্রবেশ,
বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ
থাকে ও এই সময়ে মঠ-মন্দিরের
প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে। অম্বুবাচী মেলা
[সম্পাদনা ]
image
অম্বুবাচীর সময় হিন্দু ধর্মীয় লোকেরা
শক্তি পূজার স্থানগুলোতে আয়োজন করা
উৎসবকে অম্বুবাচী মেলা বলা হয়।
ভারতের অসম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরের
কামাখ্যা দেবীর মন্দিরে প্রতি বৎসর
অম্বুবাচী মেলার আয়োজন করা হয়।
আম্বুবাচী আরম্ভের প্রথম দিন থেকে
কামাখ্যা দেবীর দ্বার বন্ধ রাখা হয়
ফলে আম্বুবাচীর সময় দেবী দর্শন
নিষিদ্ধ থাকে। চতুর্থ দিন দেবীর স্নান ও
পূজা সম্পুর্ন হওয়ার পর কামাখ্যা মাতার
দর্শন করার অনুমতি দেওয়া হয়। ভারতের
বিভিন্ন প্রান্তের থেকে আসা লক্ষ লক্ষ
ভক্তেরা (বর্তমান দিনে বিদেশ থেকে
আসে) কামাখ্যা মন্দিরের চতুর্দিকে
বসে কীর্ত্তন করেন। মন্দিরের বাহিরে
প্রদীপ ও ধূপকাঠী জ্বালিয়ে দেবীকে
প্রনাম করেন। অম্বুবাচী নিবৃত্তির দিন
পান্ডারা ভক্তদের রক্তবস্ত্র উপহার
দেন। দেবী পীঠের এই রক্তবস্ত্র ধারন
করিলে মনোকামনা পুর্ন হয় বলে
ভক্তেরা বিশ্বাস করেন। এই রক্তবস্ত্র
পুরুষেরা ডানহাত বা গলায় ও মহিলারা
এই বস্ত্র বাওহাত বা গলায় পরিধান
করেন। রক্তবস্ত্র পরিধান করে শশ্মান বা
মৃতের ঘরে যাওয়া নিষিদ্ধ। কামাখ্যা
ধামের অম্বুবাচী মেলা আন্তর্জাতিক ও
জাতীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বিশেষ
ভূমিকা পালন করেছে।
অম্বুবাচী উপলক্ষ্যে কামাখ্যা মন্দিরে চলছে মা কামাখ্যা যোনি পূজা… অম্বুবাচী উপলক্ষ্যে কামাখ্যা মন্দিরে চলছে মা কামাখ্যা যোনি পূজা… Reviewed by Admin Amit on June 25, 2018 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.