সম্প্রতি এমনই এক অদ্ভুত ও বিতর্কিত তথ্যের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, মধ্য প্রদেশের একটি গ্রামে এক চিকিৎসক নাকি দেখা পেয়েছেন মহাভারতের কৌরব বাহিনির সেনানায়ক অশ্বত্থামার।
আচার্য দ্রোণাচার্য ও তাঁর স্ত্রী কৃপীর একমাত্র সন্তান অশ্বত্থামা, যিনি সাত ‘চিরঞ্জীবী’র একজনও বটে। চিরঞ্জীবী, অর্থাৎ মহাকাব্যের এমন সাত জন পুরুষ যাঁরা নাকি এখনও বেঁচে রয়েছেন। কলি যুগের সঙ্গেই শেষ হবে তাঁদের জীবন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধ্য প্রদেশের ওই ব্যক্তির কপালে একটি ক্ষত ছিল, যেখান থেকে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। নানা ভাবে সেই রক্তপ্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি চিকিৎসক। তখন নাকি হাসতে হাসতেই তাকে অশ্বত্থামার সঙ্গে তুলনা করেন ওই চিকিৎসক।
প্রসঙ্গত, মহাকাব্যের অশ্বত্থামা জন্মেছিলেন মহাদেবের কৃপায়। জন্মলগ্ন থেকেই তাঁর কপালে একটি মণি ছিল, যার জন্য এই মহারথীর খিদে, তৃষ্ণা বা কোনও ক্লান্তি আসত না।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় পিতা দ্রোণাচার্যের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে অর্জুনকে হত্যা করতে উদ্যত হন অশ্বত্থামা। দুই যোদ্ধাই শক্তিশালী ব্রহ্মশীর্ষ অস্ত্র নিক্ষেপ করেন পরস্পরের উদ্দেশ্যে। বিশ্বকে বিনাশের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তখন স্বয়ং ব্যসদেব এসে আদেশ দেন নিজ নিজ অস্ত্র প্রত্যাহার করতে। অর্জুন তা করতে পারলেও, অশ্বত্থামা তা পারেননি। উলটে, তিনি সেই অস্ত্রের দিক পরিবর্তন করে পাঠিয়ে দেন অর্জুনের পুত্রবধূ উত্তরার দিশায়। তখন তাঁর গর্ভে পাণ্ডবদের উত্তরসূরী পরীক্ষিত।
শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় পরীক্ষিত রক্ষা পেযেছিলেন ঠিকই, কিন্তু অভিশাপ কুড়োন অশ্বত্থমা। কপালের মণি খুলে ফেলতে বাধ্য হন যোদ্ধা। এবং কৃষ্ণ তাঁকে অভিশাপ দেন যে, আগামী ৩০০০ বছর দীর্ণ-জরাগ্রস্থ অবস্থায় বেঁচে থাকবেন তিনি। তাঁর কপালের ক্ষত থেকে অনুবরত রক্তপাত হবে বলেও বলেন শ্রীকৃষ্ণ।
মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় নিয়ে মতভেদ রয়েছে প্রভূত। আনুমানিক ক্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সাল, বা তার কিছু পরে হয় এই যুদ্ধ। শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপের কথা হিসেব করলে অশ্বত্থামা হয়তো এখনও বেঁচে রয়েছেন।
মধ্যপ্রদেশের ওই চিকিৎসকের কথাও একেবারে ফেলে দেওয়া যায় না।
ভারতের অন্যতম এক আধাত্মিক গুরু ‘পাইলট বাবা’ও বিশ্বাস করেন যে মহাভারতের অশ্বত্থামা এখনও জীবিত। হিমালয়ের পাদদেশে তিনি নিজে তাঁর দেখা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই সাধক। স্থানীয়দের মতে, বছরে নাকি একবার সেই ব্যক্তিকে দেখা যায়। প্রচুর পরিমাণে খাবার খেয়ে এবং জল পান করে আবারও তিনি মিলিয়ে যান পাহাড়ের কোলে।
হিমালয়ের এই রহস্যজনক ব্যক্তি লম্বায় ১২ ফুট বা তারও বেশি হবে, যা এ যুগে বিরল। কিন্তু, দ্বাপর যুগের পুরুষদের গড় দৈর্ঘ্য হতো ১২ থেকে ১৪ ফুট।
এমন বেশ কিছু তথ্য ইঙ্গিত করছে যে, শ্রীকৃষ্ণের অভিশাপ সত্য হলেও হতে পারে!
৩০০০ বছর ধরে জীবিত রয়েছেন মহাভারতের এই যোদ্ধা!
Reviewed by Admin Amit
on
June 29, 2018
Rating:
No comments: