বর্ধমানে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘স্বর্ণরথ’

 


একেবারে সোনার বরণ৷ দেখে মনে হবে যেন সোনায় তৈরি৷ এমনই পিতলের রথ এ বছর তাক লাগাবে বর্ধমানে৷ উচ্চতা ২৩ ফুট৷ এবার রথযাত্রায় বর্ধমানবাসীর সঙ্গে গোটা রাজ্যেরই নজর কাড়বে এই রথ৷ 
প্রায় এক বছর ধরে নবদ্বীপে এই রথ তৈরি হয়েছে৷ এবার চূড়ান্ত সাজসজ্জার জন্য রাখা হয়েছে শহরের টাউন হল প্রাঙ্গনে। আগামী ১৩ জুলাই বিকেলে শহরের কয়েক হাজার মানুষ শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই রথকে নিয়ে যাবেন ঐতিহাসিক কাঞ্চননগর রথতলার মাঠে।
রথযাত্রার দিন ঐতিহ্য মেনে লোহার পুরনো এবং নতুন পিতলের রথ টানবেন অগনিত ভক্ত৷ ইতিমধ্যেই শহরে এই নতুন পিতলের রথকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উন্মাদনা। রথতলা রথযাত্রা পরিচালন সমিতির সভাপতি ও বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল খোকন দাস জানিয়েছেন, ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নবদ্বীপ শহরে এই রথ তৈরি করা হয়েছে প্রায় এক বছর ধরে৷ সম্পূর্ণ পিতলের এই রথ ২৩ ফুট লম্বা এবং ১৩ ফুট চওড়া৷
ইতিমধ্যেই রাজ আমলের তৈরি রথতলায় রথ রাখার ঘর সারিয়ে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বর্তমান লোহার রথ যেমন রাখা থাকবে, তেমনই নতুন পিতলের রথও সারা বছর থাকবে। স্থানীয়সূত্রে খবর, ১৭০২ থেকে ১৭৪০ সাল অবধি বর্ধমান রাজ পরিবারের দায়িত্বে ছিলেন কীর্তিচাঁদ রায়। তিনি রাজা ছিলেন না। কিন্তু তাঁর ছেলে চিত্রসেন রায় পরবর্তীকালে রাজা উপাধি পেয়েছিলেন৷
কীর্তিচাঁদের সময়ে বর্ধমানে বহুকিছু নির্মাণ করেছিলেন। তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বারদুয়ারি, মহন্তস্থল প্রভৃতি৷ ১৭৩০ সাল নাগাদ কীর্তিচাঁদ সাধারন নাগরিকদের মনোরঞ্জনের জন্য কাঞ্চননগরে রথ যাত্রার প্রচলন করেছিলেন। তাঁর আরও পরে রাজা চিত্রসেন রায় কেবলমাত্র রাজ পরিবারের সদস্যদের জন্য চালু করেছিলেন রথযাত্রার। সেই সময় সাধারণ মানুষের জন্য যে ঐতিহ্যবাহী কাঠের রথ তৈরি হয়েছিল তা বেশ কয়েক বছর আগেই নষ্ট হয়ে যায়।
এরপর স্থানীয়দের উদ্যোগে লোহার রথ তৈরি করা হয়েছিল। এতদিন এই রথকেই সুন্দর ভাবে সাজিয়ে রথযাত্রার জন্য প্রস্তুত করা হত। স্থানীয় এলাকা-সহ গোটা শহর এমনকী জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও মানুষ আসতেন রথযাত্রায় সামিল হতে। তবে পিতলের তৈরি ২৩ ফুটের এই নতুন রথ এ বছর রথযাত্রার নতুন আকর্ষণ হতে চলেছে বর্ধমানবাসীর কাছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই৷
বর্ধমানে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘স্বর্ণরথ’ বর্ধমানে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘স্বর্ণরথ’ Reviewed by Admin Amit on July 10, 2018 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.