বহু বছর আগে ডাকাতদের হাতে সৃষ্টি প্রাচীর কালী পুজো আজও প্রথা মেনে হয়ে আসছে মালদহের গোবরজনা এলাকায়।
মালদা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পুকুরিয়া থানার অন্তগর্ত গোবরজনা এলাকায় অবস্থিত এই প্রাচীন কালী মন্দির। যা গোবরজনার কালী নামে পরিচিত। সোমরাজ মিশ্র নামে পুজো কমিটির এক সদস্যের থেকে জানা গেল শতাব্দী প্রাচীন এই কালী পুজোর ইতিহাস। আনুমানিক কয়েকশো বছর আগে এক রাতে গোবরজনার কালিন্দ্রী নদী দিয়ে নৌকা করে এক ডাকাতি করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ এক বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে তাদের নৌকো আটকায়। গোবরজনা গ্রামের কাছে বাধ্য হয়ে সেখানে অস্থায়ী শিবির তৈরি করে আশ্রয় নেয় ডাকাত ভবানী পাঠক , দেবী চৌধুরানী ও তাদের দলবল। সেখানে স্বপ্নাদেশ পায় ভবানী পাঠক। স্বপ্নে তাকে মা কালী কালিন্দ্রী নদীর ধারে জঙ্গলের মধ্যে পূজো করতে আদেশ দেয়। মায়ের আদেশ মতো মূর্তি নির্মাণ কাজ শুরু করে তারা কিন্তু দেখা দেয় অন্য এক সমস্যা। কারণ সেখানকার মাটি ছিল বালি মাটি। বাধ্য হয়ে মাটির সাথে গোবর মিশিয়ে তৈরী করা হয় কালী প্রতিমা। এরপর থেকেই কালক্রমে জায়গার নাম হয় “গোবরজনা”। পরবর্তী সময় ধীরে ধীরে রাজপুত, মৈথিল ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরাও ধূমধাম করে এই পুজো প্রথা মেনে করে আসছেন। ফেসবুক হোয়াটসআপের যুগেও এই পূজোর গুরুত্ব অপরিসীম। পূজো উপলক্ষে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি পাঁঠা বলি হয় এই পূজো উপলক্ষে। বসে বিশাল মেলা। বর্তমান সামাজিক ও ধর্মীয় মেরুকরণের মধ্যে এই পূজো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অন্যতম নজির। প্রাচীন প্রথা মেনে মাটির সঙ্গে গোবর মিশিয়ে এই বছরেও শুরু হয়ছে প্রতিমা নির্মাণের কাজ। জেলা সহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে ভক্তরা আসে। কয়েক লক্ষ্য মানুষের সমাগম হয় এখানে। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে পুজোকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলা হয় গোটা এলাকা। এই বছরও পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত পুজো কমিটির সদস্যরা।
প্রথা মেনে আজও চলছে সর্দার ভবানী পাঠকের কালী পুজো
Reviewed by Admin Amit
on
July 08, 2018
Rating:
No comments: